আমিরুল ইসলাম কাগজী
এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম অনেক আশা নিয়ে অন্তর্বতী সরকার থেকে পদত্যাগ করে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি সংক্ষেপে এনসিপি গঠন করেছিলেন। ভেবেছিলেন জুলাই -আগস্ট বিপ্লবের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে সারাদেশে একটা আড়োলন সৃষ্টি করতে পারবেন। গড়ে তুলতে পারবেন একটা বড় রাজনৈতিক দল।ভালো ফলাফল পাবেন ভোটের মাঠে। কিন্তু কতটা এগিয়ে নিতে পারলেন নতুন দলকে সেটা চট করে জবাব দিতে না পারলেও খুব যে সাড়া পাচ্ছেন সেটা মনে হচ্ছে না।মনে হয় সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর যে চাপ তাতে আগামী জুনের মধ্যে ভোট হতে পারে। কিন্তু সেই টার্গেট সামনে রেখে নাহিদ এখনো সেভাবে সারাদেশে দল গোছাতে পারেননি। রাজনীতিতে তিনি তার দলের শক্তি, সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতার বাইরে গিয়ে বড় দল হিসেবে দাবি করছেন।
তাদের মতো করে সংস্কার না হলে নির্বাচনে যাবেন না বলে এক ধরনের বার্তা দিয়েছেন। প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে এমন কথা বলতেও ছাড়ছেন না। তার বক্তব্য শুনলে মনে হয়- তাদের যেন কাউন্ট করা হয়।
এখন নির্বাচন দিলে এনসিপির যদি সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকতো, দলটি এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হতো, তাহলে নাহিদ এ কথা কী বলতেন?
না বলতেন না। উনারা আসলে দেরি করতে চাচ্ছেন, সময়ক্ষেপণ করতে চাচ্ছেন।
এতে তাদের দুইটা লাভ। তারা দল গোছানোর সময় পাবেন বলে মনে করেন। আবার বিএনপির বিরুদ্ধে বলে বলে নিজেদের জনমত বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। কারণ তাদের নিজস্ব দলীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট করতে পারেনি মানুষের কাছে।
যেহেতু মাঠে বিএনপির অবস্থান ভালো, বিএনপির বিরুদ্ধে আরো নেতিবাচক প্রচারণা চালানোর চেষ্টা তারা করেই যাবে।
জামায়াতে ইসলামীও ভালো করে জানে এখন ইলেকশন হলে তারা ভোট বেশি পাবে না। তাই জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন নিয়ে কোন তাড়া নেই। তবে দু্র্নাম বদনাম করে, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলে যদি দলকে অপরাধী সাব্যস্ত করা যায় সেটা তাদের জন্য লাভ। উপরে উপরে বিএনপির সাথে থাকবে। পেছনে পেছনে সমালোচনা করবে।
বিএনপি বছরের পর বছর আন্দোলন করেছে নির্বাচনের জন্য । এখনো তার অবস্থান একই। একবারও তার অবস্থা থেকে সরেনি। দলটি ভালো করেই বুঝতে পারছে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশল। তাদের ফাদে বিএনপি কেন পা দেবে? বড় দল হয়ে এখন নির্বাচন দিলে সরকার গঠনের সুযোগ কেন হাতছাড়া করতে চাইবে তারা?
আর যারা বলে বিএনপি সংস্কার চায় না, এইটা একটা মুখস্থ কথা, বলার জন্য বলা।
সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। নতুন পরিস্থিতিতে, সময়ের প্রয়োজনে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিএনপি বরাবর সব ধরনের ইতিবাচক সংস্কারের পক্ষে। তারপরেও দলটিকে সংস্কারের বিপক্ষে বলে চালানোর চেষ্টা চলছে।