বরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতির হওয়ায় চিকিৎসকরা কিছু দিন আগে গুণী এই শিল্পীকে আইসিইউতে রাখেন।
বিষয়টি পরিষ্কার করে শিল্পীর স্বামী গাজী আব্দুল হাকিম জানান, শারীরিকভাবে উনি (ফরিদা পারভীন) গুরুতর অসুস্থ, কিন্তু তাকে নিয়ে যে খবরটি ছড়িয়েছে সেটা ভিত্তিহীন। যে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, তা আমাদের পরিবারকে মানসিক চাপে ফেলেছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
এর আগে কিছু সামাজিকমাধ্যমে দাবি করা হয়, চিকিৎসা ব্যয়ের অভাবে ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু সংগঠন এবং ব্যক্তি অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগও নেয় বলেও অভিযোগ শোনা যায়। এই সব দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয় ফরিদা পারভীনের পরিবার।
তার ছেলে ইমাম জাফর নোমানী স্পষ্ট করে বলেন, আম্মার চিকিৎসার জন্য কোনো আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই। আম্মা বা আমরা কেউই এ ধরনের কোনো আবেদন করিনি।
ইমাম জাফর নোমানী নিজের ফেসবুকে লেখেন, একটু আগেই আইসিইউতে আম্মার (ফরিদা পারভীন) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তার অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভাল্র। ডাক্তার বললেন, এখনো বেশ দুর্বল ও নাজুক অবস্থায় আছেন।
এসময় তিনি সবার উদ্দেশে লেখেন, সবাইকে অনুরোধ, আপনারা দয়া করে কোনো গুজব ছড়াবেনও না এবং গুজবে কানও দেবেন না। আমি আমার ফেসবুক থেকে আম্মার সব আপডেট দিতে থাকব, ইনশাআল্লাহ।
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরেই লিভারজনিত সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। কয়েক দিন আগে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। জন্ম নাটোরে হলেও বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে ফরিদা পারভীন লালনসংগীতে তালিম নেন।
ফরিদা পারভীন সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।