নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্দামান সাগরে ফেলে দিচ্ছে ভারত। এই অভিযোগ তুলেছেন ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। এ ঘটনায় জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, রোহিঙ্গাদের জীবনকে ভারত চরম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জন রোহিঙ্গাকে স্থানীয় থানায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে ছবি ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহের কথা বলে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। পরে আটক করে ইন্দরলোক আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর বাসে করে নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজে তোলা হয়।
শরণার্থীদের অভিযোগ, জাহাজে থাকার সময় তাদের হাত প্লাস্টিক দিয়ে বেঁধে রাখা হয়, চোখ-মুখ ঢেকে দেওয়া হয় এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এক রোহিঙ্গা বলেন, আমাদের বন্দির মতো রাখা হয়েছিল, অনেককে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে, বাঁশ দিয়ে খোঁচানো হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের অভিযোগে বলা হয়, ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়েও তাদের জেরা করা হয়েছে। খ্রিস্টান রোহিঙ্গাদের প্রশ্ন করা হয়েছে কেন তারা ইসলাম ছেড়ে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এমনকি শারীরিক পরীক্ষা পর্যন্ত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মিয়ানমারের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস অ্যান্ড্রু বলেন, তাঁরা এমন বেশ কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন যেগুলো থেকে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের আন্দামানে নিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এসব তথ্য জেনেভায় ভারত মিশনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে তারা কোনো জবাব দেয়নি।
এদিকে এইচআরডব্লিউ বলেছে, বিজেপি শাসিত ভারতের রাজ্যগুলো থেকে ‘অবৈধ অভিবাসী’আখ্যা দিয়ে রোহিঙ্গা এবং বাংলাভাষী মুসলমানদের বহিষ্কারের জন্য একটি অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানে এমন ১৯২ জনকে পাঠানো হয়েছে, যারা রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিল। এই রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ইউএনএইচসিআর নিবন্ধিত ছিল। এরপরও তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।
জেড নিউজ, ঢাকা।