শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকার কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে গুমকে। গত ১৫ বছরে সাত শতাধিক মানুষ গুম হন, যাদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জনের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি।
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর গঠিত গুম তদন্ত কমিশনে এক বছরে ১,৮০০ অভিযোগ জমা পড়ে। যার মধ্যে ভুক্তভোগী রহমতুল্লাহ জানান, ২০২৩ সালে র্যাব তাকে তুলে নিয়ে ৯ মাস আটক রাখে ও নির্যাতন চালায়। এরপর ভারতের পুলিশের কাছে তুলে দিলে পাসপোর্ট ছাড়াই কলকাতায় নিয়ে জেলে রাখা হয়। যেখানে আবারও দফায় দফায় নির্যাতনের পর পুশ-ইনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
গুম তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে, তিন স্তরের পিরামিডের মাধ্যমে গুম বাস্তবায়িত হতো । যার শীর্ষে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের এসব অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে। পরবর্তিতে গুমের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে গুম দিবস পালনেরও ঘোষণা দেয় জাতিসঙ্ঘ।
মানবাধিকার কর্মীদের মতে, গুম মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক ভয়াবহ রূপ। বর্তমানে গুমের নতুন ঘটনা না ঘটলেও বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। এ অবস্থায় ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রস্তাবিত আইনে গুম করার অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
জেড নিউজ , ঢাকা ।