তেহরানের আকাশ জুড়ে লেজারের বাহারি আলোর খেলা। নিচে লাখো মানুষের কণ্ঠে বিজয়ের গান। হাতে জাতীয় পতাকা। ধংসের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ভবনগুলোর গায়ে তারাবাতির ঝলকানি। ১২ দিন পর জনস্রোতের এই পদভার তেহরান যেন আগলে নিয়েছে স্বগৌরবে- আনন্দ চিত্তে।
দুই দেশেই ব্যাপক ধংসযজ্ঞ চালিয়ে অবশেষে মঙ্গলবার কার্যকর হয়েছে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ বিরতি। যদিও শেষ মুহূর্তেও ইসরায়েলে ব্যাপক তান্ডব চালায় ইরান। ইতিমধ্যে যুদ্ধে দুই দেশই তাদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব প্রকাশ করেছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তারা ৩৯ হাজার ক্ষতির আবেদন পেয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রাজধানী তেল আবিব ও আশকেলোন। তবে বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, ইসরাইলে প্রকৃত ক্ষতি আরো অনেক বেশি। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষতির বিষয়টি একেবারেই উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ ৬০০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তেহরান। যদিও অবকাঠামোগত ক্ষতির হিসাব এখনো নিরুপণ হয়নি দেশটিতে।আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ বন্ধ হলেও এই যুদ্ধে কে হেরেছে- ইসরায়েল, ইরান নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? সেই হিসাব এখনো মেলানো সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণে ইসরায়েল-আমেরিকার যে একচ্ছত্র বলয় সেটি ভেঙে খানখান হয়ে গেছে এই যুদ্ধে। কেননা যুদ্ধে ইরান একা যে শক্তিমত্তা প্রদর্শন করেছে তা ধারনারও বাইরে ছিলো নেতানিয়াহু ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আগামীতে ইরান কিংবা ফিলিস্তিন কারো দিকে চোখ তুলে তাকাতে হলে অন্তত কয়েকবার ভাবতে হবে জায়োনিস্টদের।
এদিকে যুদ্ধের ফলে ইরানের অভ্যন্তরে যে রাজনৈতিক অনৈক্য এতোদিনে দানা বেধেছিলো তার অবসান ঘটেছে। দলমতের উর্ধে উঠে খামেনি প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটির জনগণ। তাদের কাছে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী এখন লৌহ মানব-আধ্যাত্মিক নেতা।
তার দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব কেবল মধ্যপ্রাচ্যই নয় ইরানকে নতুন পরিচয়ে পরিচিত করিয়েছে গোটা বিশ্বে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পেছনে ফেলে তাই এটিই যেন ইরানের বিজয়। যেই বিজয়ের গর্বে গর্বিত পুরো পারসিয়ান জাতি।
জেড নিউজ, ঢাকা।