ফ্যাসিবাদ পতনের সূচনার দিন
একাত্তর, একটি জাতির আত্মপ্রকাশের বছর। আর চব্বিশ-সেই জাতির কলঙ্ক ঘোঁচানোর বছর। একটি জাতিকে দাসত্বের করাল গ্রাস থেকে মুক্তির বছর। এক ভয়াবহ রক্ত নদী পেরিয়ে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার আজ প্রথম প্রহর।
১ জুলাই ২০২৪। দিনটি ছিল সোমবার। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ এবং কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের সূচনা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও।
দীর্ঘ ১৬ বছর এক টানা ক্ষমতা থাকা দল আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে থোড়াই কেয়ার করে। তারা শিক্ষার্থীদের দমন করতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে লেলিয়ে দেয় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের।
এর আগে ৫ জুন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। আন্দোলনের শুরু সেখান থেকেই। ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন রুপ নেয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। এখানেই যেন খোদাই করা ছিলো গণবিরোধী দল আওয়ামী লীগের পতনের ইতিহাস।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে। ওই সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম তিন দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। ওই সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।
কোটা মুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার ডাক দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে- প্রতিবাদী এমন অনেক স্লোগন দিতে থাকে। এরপর ধীরে ধীরে সময় গড়ায়। বাড়তে থাকে জুলুম নির্যাতন। ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের সারথী হয়ে নিপীড়নের মাঠে নেমে পড়ে হাসিনার পুলিশ বাহিনী। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
এদিকে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সারাদেশে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো। রক্তাক্ত জুলাইয়ের প্রথম প্রহরে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী-ন্যাশনাল সিটিজেন্স পার্টি-এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ ও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচী ৩৬ জুলাই তথা বিজয়ের দিন পর্যন্ত চলবে বলে জানা গেছে।
জেড নিউজ, ঢাকা।