ভ্যাটের কার্যকর হার ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ ধরে সিপিডি এই হিসাব বের করেছে।
দেশের ভ্যাট ব্যবস্থায় যে পরিমাণ অব্যাহতির সুযোগ রয়েছে এবং যে পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে, তাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা ‘হারিয়েছে’ বলে ধারণা মিলেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) এক গবেষণায়।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বেসরকারি এ গবেষণা সংস্থা।
সিপিডির জ্যৈষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামীম আহমেদ বলেন, “আমরা যেটা করেছি, ইফেক্টিভ রেট (ভ্যাটের কার্যকর হার) বের করেছি, যেটা আসছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ।
“সেটি দিয়ে আমরা দেখেছি, আমাদের একচুয়াল ভ্যাট আদায় কত আসা উচিত। মানে ভ্যাট আদায় যত হয়েছে সেটা বাদ দেওয়ার পরেও সেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ১ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকার মত আসছে।”
গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর আদায় করেছে ১ লাখ ৩২ হাজার ০৩৬ কোটি টাকা। তবে সে সময়ে ভ্যাট বাবদে ৩ লাখ ২০ হাজার ১১৭ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে আসার ‘সম্ভাবনা’ ছিল।
বাকি অর্থ কর ফাঁকি ও অব্যাহতির জন্য এনবিআর ‘হারিয়েছে’ বলে গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে।
দেশের ভ্যাট আইন অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ করা হলেও বর্তমানে অনেক পণ্য ও সেবায় অব্যাহতি রয়েছে। সেসব হিসাব করে সিপিডি দেখিয়েছে, বর্তমানে ভ্যাটের কার্যকর গড় হার হল ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এ গবেষণার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে করপোরেট কর এবং দেশের বিভিন্ন এলাকার ৩৮৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভ্যাটের তথ্য সংগ্রহে করেছে সিপিডি।
গবেষণায় বলা হয়, ৭২ শতাংশ কোম্পানি মনে করে, করপোরেট করের ক্ষেত্রে কর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তাদের জন্য ‘অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ’। ৮২ শতাংশ মনে করে, তাদের ওপর ‘অন্যায্য’ হারে কর বসানো হয়েছে।
এছাড়াও ৭৯ শতাংশ কোম্পানি এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘জবাবদিহিতার অভাবকে’ তাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখিয়েছে।
২০২৫ সালের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হলে ভালো হত–এনবিআরের এক কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের জবাবে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “আমরাও চেয়েছিলাম ২৫ সালের ডেটা নিয়ে গবেষণা করতে। কিন্তু আনফরচুনেটলি এনবিআরে তথ্য চেয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।”