বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত এখনো ‘সামিট গ্রুপ’নির্ভর। বিদ্যুতের জন্য দেশের মানুষ সামিট গ্রুপের কাছে রীতিমতো জিম্মি। দেশের বিদ্যুৎ খাত পরনির্ভরশীল এবং ঝুঁকিতে ফেলেছিল স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার। মূলত সামিট গ্রুপকে বিদ্যুৎ খাতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব দিতেই দেশ ঝুঁকিতে ফেলে পতিত সরকার।
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন হওয়ায় অঘোষিতভাবে বিদ্যুৎ খাতের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে যায় সামিট গ্রুপ। বিদ্যুতের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিত তারা।
দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পুঁজি করে দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বিশেষ বিধান পাস করা হয় ২০১০ সালে। এ আইনে টেন্ডার ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর দেশের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদার অবাস্তব প্রাক্কলন করে একের পর এক ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
সামিট, বাংলাক্যাট, মোহাম্মদী গ্রুপ, ডরিন, বারাক, সিনহাসহ বেশ কিছু কোম্পানি একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে। যদিও এত বেশি কেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। ফলে অনেক কেন্দ্রই নামমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
দেশি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত সক্ষমতার প্রায় ২১ শতাংশই সামিটের। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত সামিট গ্রুপকে ৪ হাজার ৪০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে। যা এ সময়ের মধ্যে পরিশোধিত মোট ক্যাপাসিটি চার্জের প্রায় ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সামিট গ্রুপের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সামিট গ্রুপের ১৯১টি ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৪২ কোটি টাকা ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জেড নিউজ, ঢাকা।