ধলাই নদীর টলমলে জলে ডুবে থাকা সাদা পাথর, ঝিরিঝিরি হাওয়া, পাশে সবুজ পাহাড়। প্রকৃতির এমন মুগ্ধকর ছবি এখনও খোদাই হয়ে আছে দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটকের মনে। সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের রয়েছে বেশ নামডাক। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও আছে খ্যাতি। সেই খ্যাতি ও নামডাক মুছে যাওয়ার পথে। নদীর তলদেশে বড় বড় গর্ত, ঘোলা পানি আর পাথরশূন্য ধু-ধু বালুচরই এখনকার বাস্তবতা।
লাগামহীন লুটপাটে প্রায় পাথরশূন্য হয়ে পড়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগে জাফলংয়ের মতো ভোলাগঞ্জের পাথর কোয়ারির ‘চাবি’ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর হাতে। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পাথর উত্তোলন করতেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পরও পাথর লুটের ধারা বন্ধ হয়নি। উল্টো বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল পাথর কোয়ারি চালুর পক্ষে অবস্থান নেয়। সরকার ইজারা বাতিল করে একের পর এক অভিযান চালালেও সব দলের নেতাকর্মী সে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামে। এমনকি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জাফলংয়ে গেলে তাদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়া হয়।
ইজারা স্থগিত থাকার পরও অনেকটা প্রকাশ্যে রাতদিন বোমা মেশিন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাথর তোলা চলতে থাকে। ফলে পাথরশূন্য নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়ে পানির স্বচ্ছতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, এক বছরের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ঘনফুট পাথর উধাও হয়ে গেছে, যার বাজারমূল্য কয়েকশ কোটি টাকা।
জেড নিউজ , ঢাকা ।