কলকাতার নিউটাউন গত এক বছরে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের স্থায়ী আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিভিন্ন কারণে দেশ ছেড়ে আসা এসব নেতা এখন এই এলাকায় কেবল সাময়িকভাবেই থাকছেন না, বরং অনেকেই সপরিবারে স্থায়ীভাবে আস্তানা গেড়েছেন। এ কারণে শহরে বিশেষ করে দুর্নীতির মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এছাড়া এখানকার স্থানীয় পরিবেশ ও জনজীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক বা আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া অনেক আওয়ামী লীগ নেতা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিউটাউনকে বেছে নিয়েছেন। হাতিয়াড়া থেকে চিনারপার্ক, রাজারহাট থেকে সল্টলেক, নিউটাউনের দীর্ঘ এলাকা এখন আওয়ামী আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এখানকার বিলাসবহুল আবাসন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং সীমান্তবর্তী হওয়ায় যাতায়াতের সুবিধার কারণে এটি তাদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। প্রথমদিকে সাময়িক বলে মনে হলেও, এখন অনেকেই এখানে জমি বা ফ্ল্যাট কিনে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে স্থায়ী বসতি স্থাপন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ কারণে নিউটাউনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। অর্থপাচার, হুন্ডি ব্যবসা এবং অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। এদের অনেকেই দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আসছেন। যা স্থানীয় অর্থনীতিতে অস্বচ্ছতা তৈরি করছে।প্রভাবশালী এসব ব্যক্তির উপস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনও অনেক সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তেমনি জনজীবনে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে নিউটাউনের শান্ত পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিলাসবহুল জীবনযাপন, উচ্চমূল্যের ফ্ল্যাট ও বাড়ির কেনা-বেচা এবং বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ থেকে আসা এই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কার্যকলাপের ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা এখন সময়ের দাবি, অন্যথায় নিউটাউন ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।
জেড নিউজ, ঢাকা