ঘরের শত্রু বিভীষণ আর বাংলাদেশের শত্রু এই দেশেরই মাটি-পানিতে বড় হওয়া স্বার্থান্বেষী এক চক্র।
গতকাল থেকে বাংলাদেশের মূলধারা গণমাধ্যমে একটি সংবাদ এসেছে “ভেঙে ফেলা হচ্ছে সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি”! সংবাদটা পড়েই কেমন অস্বস্তি হল, মনে হল পথের পাঁচালীতে সিনেমা পরিচালনার দুর্দান্ত স্বাক্ষর রাখা মানুষটাকে আমরা যথাযথ সম্মান জানাতে পারছি না। ছি!
কিন্তু সরেজমিনে যা জানা গেল তা হল, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে বাড়িসহ জায়গাটি কিনে নেয় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ময়মনসিংহ।
এমনকি ময়মনসিংহ জেলার প্রশাসনিক নথিপত্রে ভবনটি “পরিত্যক্ত” হিসেবেই উল্লেখ করা আছে।
প্রশ্ন জাগে পরিত্যক্ত এই ভবনটি নিয়ে এমন নোংরা খেলায় মাতলো কারা?
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ-ঢাকা বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন গুজবটি ছড়ানোর প্রাথমিক দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কোনো ধরনের ভিত্তি ছাড়াই হাওয়ার উপরে তিনি দাবী করেছেন এটি “রায় পরিবারের বাড়ি “।
আর এই স্পর্শকাতর গুজবটি লুফে নিয়েছেন আওয়ামী প্রোপাগান্ডিস্ট শামীম আশরাফ।
অন্যদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম মুহূর্তে গরম হয়ে উঠেছে এই খবরটি পেয়ে, বরাবরের মতো কোন ফ্যাট চেকিং ছাড়াই তারা বাংলাদেশ সরকারকে দোষারোপ করে সংবাদ ছাপিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে আরেক কাঠি সরেস হলো ভারতের Ministry of External Affairs(MEA), তারা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে এই ভবনটি না ভেঙ্গে ফেলার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রীয় স্টেটমেন্ট দিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের মতো তারাও ফ্যাট চেকিং কে থোরাই কেয়ার করে।
একটি দেশের সর্বোচ্চ মাধ্যম থেকে শুধু একটি গুজবের উপর ভিত্তি করে যখন এমন স্টেটমেন্ট আসে, তখন মনে প্রশ্ন জাগে এমন গুজব ভারতের প্রেসক্রিপশনেই তৈরি হচ্ছে না তো?