ইতিহাস গড়া এক মৌসুমের পর ইউরোপা লিগে খেলার স্বপ্ন দেখেছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। কিন্তু উয়েফার এক সিদ্ধান্ত সেই স্বপ্নে ছাই ঢেলে দিয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্রীড়াবিচার আদালতে (Court of Arbitration for Sport) আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্লাবটি। এর ফলে নটিংহ্যাম ফরেস্ট—যারা প্রিমিয়ার লিগে সপ্তম হয়েছিল এবং কনফারেন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল—তারা এখন ইউরোপা লিগে জায়গা পাচ্ছে।
সমস্যার মূল কারণ ‘ঈগল ফুটবল’ নামে একটি কোম্পানি, যারা ক্রিস্টাল প্যালেসের ৪৩ শতাংশ মালিক এবং নিয়ন্ত্রণ করেন জন টেক্সটর। একইসঙ্গে তিনি ফরাসি ক্লাব লিঁও’রও বড় অংশীদার, যারা ইউরোপা লিগে খেলবে। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাধিক ক্লাবের ওপর “নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব” থাকলে, তারা একসঙ্গে উয়েফার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে না।
প্যালেস কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছে, তারা স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয় এবং টেক্সটরের প্রভাব সীমিত। এমনকি টেক্সটর ২৩ জুন নিউ ইয়র্ক জেটসের মালিক উডি জনসনের কাছে ‘ঈগল ফুটবলের’ শেয়ার বিক্রির চুক্তি করেন। তবে সেটি প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, যা পেতে আরও দুই মাস লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে একই মালিকানাধীন ম্যানচেস্টার সিটি ও জিরোনা (চ্যাম্পিয়নস লিগ) এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নিস (ইউরোপা লিগ)– এই ক্লাবগুলোকে খেলার অনুমতি দিয়েছিল উয়েফা। কারণ, তারা তাদের মালিকানা কাঠামোতে ‘প্রভাবহীনতা’ দেখাতে সক্ষম হয়েছিল।
এটা যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় হয়ে প্যালেস মনে করেছিল ইউরোপে খেলবে। কিন্তু তখন হেইসেল ট্র্যাজেডির কারণে ইংলিশ ক্লাবগুলোর নিষেধাজ্ঞার রেশে তারা সুযোগ পায়নি। এবারও এক ঐতিহাসিক অর্জনের পর এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ক্লাবটি।
তবে এই মৌসুমে তারা প্রথমবারের মতো এফএ কাপ জিতে ইউরোপা লিগের টিকিট পেয়েছিল। সেই ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক ছিলেন এবে রিচি, যিনি ম্যান সিটির বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেন।
ক্রিস্টাল প্যালেস কর্তৃপক্ষ মনে করছে, টেক্সটরের প্রভাব এতটাই সীমিত যে এই সিদ্ধান্ত ‘অন্যায় ও অপ্রত্যাশিত’। যদি ক্রীড়াবিচার আদালতে তারা জয় পায়, তাহলে আবারও ইউরোপা লিগে খেলার দরজা খুলে যেতে পারে।
তবে এই সিদ্ধান্তের কারণে এক ঐতিহাসিক মৌসুমের আনন্দে ছায়া পড়ে গেছে। ক্লাবটির কাছে এটি ‘আবেগ আর ক্ষোভের মিলিত অভিজ্ঞতা’।