Monday, May 5, 2025
More
    Homeঅর্থনীতিকিস্তি ছাড় নিয়ে ফের আলোচনায় আসছে আইএমএফ

    কিস্তি ছাড় নিয়ে ফের আলোচনায় আসছে আইএমএফ

    দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারলে জুনে ঋণের পরবর্তী দুই কিস্তি একসঙ্গে পেতে পারে বাংলাদেশ।

    ঋণের পরবর্তী দুই কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করার আগে পর্যালোচনার শেষ করলেও ফের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ।

    সোমবার (৫ মে) অনলাইনে এ বৈঠকে অংশে নেওয়ার কথা রয়েছে গভর্নর, অর্থ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর চেয়ারম্যান থাকবেন।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দৈনিক সূচিতেও এদিন বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ বৈঠক বিষয়ে তথ্য দিলেও নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

    অর্থ মন্ত্রণালয়েরও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও আইএমএফের বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়ার তথ্য দিয়েছেন।

    আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এটিই শেষ বৈঠক হতে পারে।

    দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারলে আগামী জুনে ঋণের পরবর্তী দুই কিস্তি একসঙ্গে পেতে পারে বাংলাদেশ।

    অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অনুষ্ঠানে ইতালী থাকায় তিনি এ বৈঠকে থাকছেন না।

    নিজের সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে তিনি আইএমএফের ঋণের কিস্তি নিয়েও কথা বলেন।

    আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ের আগে পর্যালোচনা সফর শেষ করেছে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল। কোনোরকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই তারা সফর শেষ করেন।

    দুই সপ্তাহের পর্যালোচনা শেষে ১৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনা চলবে। জুনের শেষের দিকে দুটি কিস্তির অর্থ পেতে পারে বাংলাদেশ।

    আইএমএফ মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জি বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা করা হবে।”

    ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলা সেই বৈঠকের ফাঁকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

    সেখান থেকে ফিরে সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২৯ এপ্রিল সংস্থাটির সঙ্গে ঋণ নিয়ে দর কষাকষির কথা বলেন। আইএমএফের ঋণ না হলেও বাংলাদেশ চলতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি।

    ঋণের শর্তের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘কিছু বিষয়’ সরকার পরিপালন করতে চায় না।

    “কেবল আইএমএফ নয়, অনেকগুলো কাজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলাম। আইএমএফের সঙ্গে যে সমঝোতা চলছিল, সেটা অব্যাহত রাখতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গেও কথা বলেছি। আইএমএফের কিছু কিছু ইস্যু আছে, যেগুলো আমরা পরিপালন করতে চাই না।’’

    “বাংলাদেশে ম্যাক্রো ইকনোমিক স্টেবেলিটি অনেক ভালো। আইএমএফ থেকে কোনো টাকা পয়সা না নিয়েই কিন্তু ফরেন রিজার্ভ স্থিতিশীল।”

    অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এ সরকার আসার পর আইএমএফ থেকে আর টাকা পাওয়া যায়নি। তাদের সহযোগিতা ছাড়াই আমরা স্থিতিশীল আছি। অতএব তারা যে শর্ত চাপিয়ে দেবে, সেটা পারবে না।”

    গত ২৯ এপ্রিল রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ ইকোনেমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর এক অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেছিলেন, আইএমএফ-এর ঋণের কিস্তি অনুমোদনের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

    তিনি জানিয়েছিলেন, ৫ মে ওয়াশিংটনে আইএমএফ এর প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে ঋণের কিস্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এরপর ২৩ মে সংস্থাটির বোর্ড সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    ঋণের প্রতিটি কিস্তি ছাড় করতে আইএমএফ তার আগের কিস্তির অর্থের ব্যবহার পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রয়োজনে শর্ত সংযোজন-বিয়োজন করে সংস্থাটি। তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের সময়ে রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রার শর্ত শিথিল করেছিল আইএমএফ।

    এবার চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে বাংলাদেশকে মোটা দাগে কয়েকটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট শর্ত হচ্ছে, মুদ্রানীতির আরও সংকোচন, মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা, নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ।

    মুদ্রার বিনিময় হার এখনই বাজারমুখী করতে পুরোপুরি নারাজ সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, “ওরা ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা বলেছে। আমরা বলেছি একেবারে ওপেন করে দেওয়া যাবে না। পাকিস্তানের মত ২৮০ টাকা, শ্রীলংকার মত ৪০০ টাকায় পৌঁছে যাবে, সেটা আমি পারব না।”

    অন্যদিকে এনবিআর সংশ্লিষ্ট শর্ত হচ্ছে- মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায়, এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা এবং কর ছাড় বন্ধ করা ও কর আদায় প্রক্রিয়া পুরোটা অনলাইনভিত্তিক করা।

    সরকারের আর্থিক বিভাগ সংশ্লিষ্ট শর্ত হচ্ছে, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের উপর সুদ ভর্তুকি যৌক্তিক হারে নামিয়ে আনা।

    জ্বালানি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট শর্ত হচ্ছে, জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানো।

    এখন আইএমএফ এর সঙ্গে ঋণ চুক্তিতে বাংলাদেশ থাকবে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

    আর্থিক সংকট সামাল দিতে ২০২২ সাল থেকে কয়েক দফা আলোচনা শেষে পরের ব্ছরের প্রথম দিকে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ।

    আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। সে বছর ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে পাওয়া গেছে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার।

    ২০২৪ সালের জুনে পাওয়া গেছে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার। তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

    তবে মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, বিদেশি মুদ্রার নিট সঞ্চিতি বা রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও রাজস্ব ব্যবস্থায় সংস্থার ঠিক করে দেওয়া শর্ত পরিপালন না করায় ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড় করেনি আইএমএফ।

    সর্বশেষ

    কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

    এক কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের...

    স্বাধীন ও স্থায়ী কমিশন গঠনের সুপারিশ স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার...

    স্বাধীন ও স্থায়ী কমিশন গঠনের সুপারিশ করে প্রধান উপদেষ্টা...

    ভয়ংকর রূপে মোশাররফ করিম

    গেল মুক্তি পাওয়া ‘চক্কর’ সিনেমায় দেখা গেছে মোশাররফ করিমকে।...

    পিএসএলে রিশাদের রেকর্ড

    দারুণ ফর্মে থাকলেও তিন ম্যাচ বসে থাকতে হয়েছে রিশাদ...

    আরও সংবাদ

    কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

    এক কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের...

    স্বাধীন ও স্থায়ী কমিশন গঠনের সুপারিশ স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার...

    স্বাধীন ও স্থায়ী কমিশন গঠনের সুপারিশ করে প্রধান উপদেষ্টা...

    ভয়ংকর রূপে মোশাররফ করিম

    গেল মুক্তি পাওয়া ‘চক্কর’ সিনেমায় দেখা গেছে মোশাররফ করিমকে।...