দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। সপ্তাহে দুই দিন তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, রক্তচাপ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। সংক্রমণ বেড়ে গেছে। তার জ্ঞানের মাত্রাও অনেক কম। কিডনি জটিলতার বিষয়টি তো আছে। সব মিলিয়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগেও চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে একই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ফরিদা পারভীন। ওই সময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুরুতেই তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় একাধিক মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে। চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হয়ে ২১ জুলাই বাড়ি ফেরেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। জন্ম নাটোরে হলেও বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে ফরিদা পারভীন লালনসংগীতে তালিম নেন।
ফরিদা পারভীন সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।
এদিকে, শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষার জন্যে ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি গানের স্কুল গড়ে তুলেছেন ফরিদা পারভীন।