মানুষকে কটাক্ষ করে কথা বলা ও হেয় প্রতিপন্ন করাই তার মূল কাজ। ক্ষমতার জোড়ে গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী। তাদের দিয়ে জমি দখল, কমিশন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ সব নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। বলছি মাদারীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাজাহান খানের কথা। যিনি গত ১৫ বছরে মাদারীপুরে বানিয়েছিলেন প্যারালাল আওয়ামী লীগ। এলাকাবাসী যাকে বলতেন খান লীগ।
এই খান লীগের অত্যাচার আর নিপিড়নে অতিষ্ঠ ছিল মাদারীপুরবাসী। শুধু তার নির্বাচনি এলাকা নয়, জেলাজুড়ে শাজাহান ও তার ক্যাডার বাহিনী তৈরি করেছিল ত্রাসের রাজত্ব।
মাদারীপুরে খান-লীগের দাপটে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অতিষ্ঠ ছিলেন। কেউ তার বিরুদ্ধে গেলেই মামলার আসামি বানিয়ে করা হতো হয়রানি। কারণ প্রশাসন চলতো তার হাতের ইশারায়।
এসবের বাইরে জেলার সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একক আধিপত্য দেখাতেন শাজাহান খান। তার সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো কাজ হতো না। যখন যাকে খুশি চেয়ারে বসাতেন, যাকে খুশি সরিয়ে দিতেন।
আধিপত্য দেখাতেন পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, থানাসহ সব অফিসে। তার নিয়োগ করা লোকজনকে কমিশন না দিলে ফাইল নড়ত না।
জেলার সব ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন তার ভাইয়েরা। গড়ে তোলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সার্বিক কনস্ট্রাকশন। জেলার ৮০ ভাগ উন্নয়নকাজ পেত ওই প্রতিষ্ঠান। অথচ কাজ করার বেলায় তিনি নেই। কমিশনের মাধ্যমে অন্য ঠিকাদারদের কাছে কাজ বিক্রি করাই তার মূল ব্যবসা। এসব করে বানিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। সেসব টাকায় বানিয়েছেন বহুতল বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর এভাবেই গোটা মাদারীপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন সব খান খ্যাত অপরাধের কিং খান-শাজাহান খান।
জেড নিউজ, ঢাকা।