স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে রাজধানীর অদূরে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম সরকারি বায়োটেক প্লান্ট। যেখানে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে ভ্যাকসিন, অ্যান্টিভেনম, থেরাপিউটিকস ও ডায়াগনস্টিকস কিট উৎপাদন করা হবে।
৪০ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। লক্ষ্য ২০৩২ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করা।
প্রথম পর্যায়ে ‘ফিল-ফিনিশ’প্রযুক্তির মাধ্যমে ২২ ধরনের ভ্যাকসিন উৎপাদন হবে। এর মধ্যে রয়েছে এইচপিভি, জাপানিজ এনকেফালাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টিটেনাস-ডিপথেরিয়া, কলেরা এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। দ্বিতীয় পর্যায়ে কাঁচামাল উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জিত হলে সম্পূর্ণভাবে দেশেই এইচপিভি ও জেই ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আছে পোলিও, পেন্টা, ডেঙ্গু, র্যাবিস, বিসিজি-টুয়েন্টি, এমআর ও রোটাভাইরাসসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ টিকা তৈরি।
তৃতীয় ধাপে প্লান্টটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্রে রূপ নেবে, যেখানে কোষ ও জিন-ভিত্তিক থেরাপিউটিকস নিয়ে গবেষণা হবে। বিশেষ করে সাপের বিষ থেকে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, যা বর্তমানে আমদানি-নির্ভর।
প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিনে আত্মনির্ভর হবে, বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে এবং মহামারি মোকাবিলায় জাতীয় প্রস্তুতি শক্তিশালী হবে।
এছাড়া এই প্লান্ট চালু হলে দেশের ওষুধ উৎপাদন সক্ষমতা দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাংলাদেশ শুধু নিজের চাহিদা পূরণেই নয়, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে।
জেড নিউজ, ঢাকা ।