বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এদিন কঠোর কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়। যার নাম ছিলো বাংলা ব্লকেড। ইতিপূর্বে বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচীর অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে মানুষ পরিচিত হলেও বাংলা ব্লকেড শব্দটি ছিলো একেবারেই নতুন। এই কর্মসূচী ঘোষণার পর সাধারণ মানুষের মধ্যেও তা ব্যাপক প্রভাব ফেলে। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকা শহর।
এদিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘আগামীকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে ফের ব্লকেড শুরু হবে। এর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবেন। কোনো আবাসিক হলে বাধা দেওয়া হলে আমাদের জানাবেন। আমরা সম্মিলিতভাবে সেই হল ঘেরাও করব।’এছাড়া সব গ্রেডে অযৌক্তিক কোটা বাতিল করে ন্যূনতম কোটা রাখতে হবে। পাশাপাশি সংসদে আইন পাস করে কোটা সমন্নয় করতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা নাতিপুতি-পোষ্য কোটাকে অযৌক্তিক কোটা মনে করছি। দাবি মেনে নিলে আজকেই আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাব।
এদিন সন্ধ্যায় আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে আলোচনা করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আলোচনা শেষে ফিরে এসে হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর একদল প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।’
বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ নিতে বেলা আড়াইটার পর বিভিন্ন আবাসিক হল ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া তিনটার মধ্যে গ্রন্থাগারের সামনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হয় মিছিল-স্লোগান। বিকেল চারটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। অবরোধ করা হয় চানখাঁরপুল মোড়, সায়েন্সল্যাব মোড়, নীলক্ষেত মোড় ও আগারগাঁওয় সড়কও।
এদিন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, রংপুর, সাভার, দিনাজপুর, গাজীপুরসহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাগুলোয় অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়। দিনভর উত্তাল থাকে এসব এলাকা। পরের দিন সোমবার ৮ জুলাই এ কর্মসূচি চলবে বলেও আন্দোলন থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
জেড নিউজ, ঢাকা।