২৮ জুলাই, ২০২৪। দিনটি ছিলো রবিবার। আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ১৪৭ মৃত্যুর তথ্য দেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। যদিও তখনকার সংবাদমাধ্যমের হিসাবে সংখ্যাটি দুই শতাধিক। আর প্রকৃত সংখ্যা ছিলো তারও অনেক বেশি। ১০ দিন পর মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট চালু হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ডিবি। পরে ওইদিন রাত ৯টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে রেকর্ড করা একটি ভিডিও গণমাধ্যমে পাঠানো হয়, যেখানে আগে হেফাজতে নেওয়া ছয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, সারজিস আলম, নুসরাত তাবাসসুম ও মো. আবু বাকের মজুমদার সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান।
এদিকে তিন সমন্বয়ক মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের এবং আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের ভিডিও বার্তাটি বিক্ষোভকারীদের আসল অবস্থান নয়। সমন্বয়কদের ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করা হয় এবং বার্তা পড়তে বাধ্য করা হয়। এর আগে গ্রেপ্তারসহ যে কোনো ধরণের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারেন এমন শঙ্কায়- আন্দোলন চালিয়ে নিতে তিন স্তরের নেতৃত্বের কথা জানানো হয়।
সমন্বয়করা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রথম সারির সমন্বয়করা গ্রেফতার হলে দ্বিতীয় সারির কাছে আন্দোলনের নেতৃত্ব থাকবে। দ্বিতীয় সারির সবাইকেও যদি গ্রেফতার করা হয় তাহলে নেতৃত্ব চলে যাবে তৃতীয় সারির হাতে। সরকারের চাপে পড়ে কোনো ভাবেই আন্দোলন থামানো যাবে।
এদিকে ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের আটক করে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও পৃথক বার্তায় সমন্বয়করা জানিয়ে দেন ডিবি কার্যালয়ে অস্ত্রের মুখে তারা ছয় সমন্বয়ক ভিডিও বিবৃতি দিয়েছেন। ডিবি অফিস কখনোই শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনের জায়গা নয়।
এই অবস্থায় পুলিশের এই আটক নাটকও ব্যর্থ হয়। আন্দোলন চলতে থাকে রাজপথে। সারাদেশের সাধারণ মানুষ তখন হাসিনা পতনের একদফায় নিজেদের সর্বোস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। লাশের পর লাশ পড়ছে, কিন্তু রাজপথ ছাড়ছে না কেউ। এই অবস্থায় বিচলিত হয়ে পড়ে সরকার। দফায় দফায় বৈঠক করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা চালাতে থাকে শেখ হাসিনা।
জেড নিউজ, ঢাকা।