আন্দোলন দমাতে ২২ জুলাই সোমবার থেকে সারাদেশে চিরুনি অভিযান শুরু করে হাসিনা প্রশাসন। রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫১৬ জনসহ সারাদেশে থেকে বিএনপি-জামায়াতের প্রায় হাজার দেড়েক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। মামলা দেওয়া হয় ১৬৪টি। এর মধ্যে ডিএমপিতে ৭১, চট্টগ্রাম মহানগরে ১৪ এবং অন্যান্য জেলায় ৭৯টি মামলা দায়ের করে হাসিনার পুলিশ বাহিনী। এছাড়া এদিন থেকে র্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নও অভিযান চালিয়ে ৪০ জনকে গ্রেফতার করে।
এদিন দুপুরে কিছু ব্যবসায়ীর সাথে গণভবনে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। বৈঠকে তিনি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও সহিংসতার জন্য বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ‘আরও শক্ত অ্যাকশন’নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এদিকে ২২ জুলাই পঞ্চম দিনের মতো পুরো দেশ ছিলো ইন্টারনেটবিহীন। নির্বাহী আদেশে সাধারণ ছুটি আরও একদিন বাড়ানো হয়। এর ফলে অর্থনৈতিক ভাবেও স্থবির হয়ে পড়ে দেশ।
এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত করেন।
এদিন রাজধানীর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এদিন মোটামুটি শান্ত ছিল। তবে মহাখালীতে কয়েকশ আন্দোলনকারী কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেন।
রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় আন্দোলনকারীদের তেমন তৎপরতা না থাকলেও পথে পথে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের অবস্থান ছিলো লক্ষনীয়। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান মোতায়েন ছিল। আকাশে ছিল পুলিশ-র্যাবের হেলিকপ্টার টহল।
২২ জুলাই যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা সেনা সদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন সেনা প্রধান ওয়াকারুজ্জামান। এ সময় ‘জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীরদের কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
এছাড়া যাত্রাবাড়িতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতি কড়া হুশিয়ারি দেন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
অপরদিকে হাসিনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পরিস্থিতির আরও উন্নতির জন্য কারফিউ অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন।
জেড নিউজ, ঢাকা।