পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরাসরি প্রশ্রয় ও নির্দেশনায় পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে দানবে পরিণত হয়েছিলেন ভাতের হোটেল খ্যাত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ।
কাকে ধরতে হবে, কাকে মারতে হবে, কোন সমাবেশ পন্ড করতে হবে- হাসিনার ফোনে নিজেই লেগে যেতেন সেসব কাজে। সরকারবিরোধী মিছিল পন্ড করা, বিরোধী নেতাকর্মীদের ধরে এনে নির্যাতন, টাকা আদায়—এসব ছিল তার নিত্যদিনের কাজ। হাসিনার এক ফোনেই যাকে খুশি ধরে আনতেন, পেটাতেন, মিথ্যা মামলা দিতেন । প্রয়োজন হলে সরাসরি নিজে ঢুকেও পড়তেন গণভবনে । সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং পলাতক তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে ছিল তার বিশেষ সম্পর্ক।
২০২৩ সালের অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে তা বিএনপির ওপর চাপিয়ে সমাবেশ পণ্ড করেছিলেন তিনিই।
মূলত ২০১৩ সালে বিরোধীদলীয় নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে প্রকাশ্যে নৃসংশভাবে পিটিয়ে হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হারুন। এরপর থেকে একদিকে যেমন দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে দাঁড়ান, তেমনি দুই হাতে কামিয়ে অঢেল অর্থবিত্তের মালিক বনে যান তিনি ।
অনুসন্ধানে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও ডিবি হারুন সম্পর্কে জানা গেছে নানা তথ্য। পুলিশ বাহিনীসহ সর্বত্র তিনি ডিবি হারুন এবং পরে ভাতের হোটেলের হারুন নামে পরিচিতি পান। অনেকে আবার মজা করে তাকে হাউন আঙ্কেল নামেও ডাক ।
তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হারুন বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। পরবর্তিতে সেখান থেকে নেপাল হয়ে বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থান করছেন তিনি ।
জেড নিউজ , ঢাকা ।