২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে মুসলিম জাতিগত নিধন শুরু করে দেশটির জান্তা সরকার। হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ি-ঘর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। লুট করে নেওয়া হয় সম্পদ-সম্পত্তি।
ওই হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত দিয়ে বানের জলের মতো ছুটে আসতে থাকে মানুষ। উপয়ান্তর না পেয়ে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। সেই রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর পূর্তি আজ। এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন অন্তত ১৫ লাখ।
সূত্র বলছে, হাসিনার আমলে রোহিঙ্গাদের ঢালাও ভাবে আশ্রয় দেওয়া হলেও তাদের ফেরানোর তেমন কোনো প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। উপরন্তু রোহিঙ্গাদের পূঁজি করে আওয়ামী সরকার লুটে নিয়েছে যশ-খ্যাতি আর আন্তর্জাতিক তহবিল। তবে শুরুর দিকে রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পর্যাপ্ত আর্থিক বরাদ্দ থাকলেও দিনে দিনে তাতে ভাটা পড়েছে।
সরকারি তথ্য মতে, অভ্যন্তরীণ চাপের কারনে ২০১৭ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করে হাসিনা সরকার। তবে ওই চুক্তি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। উপরন্তু এখনো অব্যাহত রয়েছে রোহিঙ্গা ঢল।
এদিকে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা দায়ের করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। হাসিনা সরকারের সদিচ্ছার অভাব এবং মিয়ানমারের অনমনীয় মনোভাবের ফলে সেই মামলায়ও কোনো ফল আসেনি। ফলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সঙ্কট বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চব্বিশের পটপরিবর্তনের পর সরকার প্রধান হিসেবে ড. ইউনূস যে গতিতে এই সঙ্কট সমাধানের চেষ্টা করছেন তাতে ইতিবাচক ফল আসলেও আসতে পারে। সে জন্য আন্তর্জাতিক তৎপরতার সঙ্গে যোগ হতে হবে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঐক্য ও সামগ্রিক প্রচেষ্টা।
জেড নিউজ, ঢাকা।