“যেই কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে ঘটনাগুলো ঘটছে, এখানে লবিস্টদের কিছু করার আছে কি না আমি ঠিক জানি না,” বলেন উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত সম্পূরক শুল্কের বিষয়ে দেশটির সঙ্গে শুক্রবার অনলাইনে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেছেন, “আমি আলোচনায় ভালো ফলাফলের বিষয়ে আশাবাদী। আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র আগামীকাল একটি অনলাইন মিটিং রেখেছে। সেই মিটিংয়ে হয়তো সেখানে যাওয়ার প্রসঙ্গ আসবে।”
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যে ১ অগাস্ট থেকে বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
এ শুল্ক কমাতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে। প্রতিনিধি দলে সরকারের উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রতিনিধি ছিলেন। শেষ মুহূর্তে আরেক দফা ওয়াশিংটনে গিয়ে আলোচনার ভাবনার কথা বলা হচ্ছিল সরকারের তরফে।
এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
শুল্কের এ খড়্গে থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ চাইছে- যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা। তার অংশ হিসেবে বছরে সাত লাখ টন গম আমদানির জন্য গত ২৯ জুলাই সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ।
দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে যুক্তরাষ্ট্রকে সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সোশাল মিডিয়ায় গুঞ্জন রয়েছে।
এ বিষয়ে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারণার ভিত্তিতে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া প্রশ্ন করবে- এটা আমার কাছে রিয়েলিস্টিক মনে হচ্ছে না। আপনার মতো আমিও একজন বাংলাদেশি।
“বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে আমরা কেন কাজ করব? তাহলে তো আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ের দরকার হয় না। কিছু জিনিস মেনে নিয়ে কাজটা করে ফেললেই তো হয়ে যায়।”
এক সাংবাদিক বলেন, যুক্তরাষ্টের শুল্ক প্রয়োগের সময় তো ঘনিয়ে আসছে।
জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আপনার মতো আমিও এ বিষয়ে উৎসুক এবং আগ্রহী। আজকের ভেতরে হয়তো একটা অনলাইন মিটিংয়ের শিডিউল পাচ্ছি।
“অনলাইন মিটিং করার পরে পরবর্তী কর্মকাণ্ড ঠিক করা হবে।”
সম্পূরক শুল্কের মতো আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন শেখ বশির।
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র তাদের ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সামনে এনে এই পদক্ষেপগুলো নিয়েছে। যেই কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে ঘটনাগুলো ঘটছে, এখানে লবিস্টদের কিছু করার আছে কি না আমি ঠিক জানি না।
“আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। সেই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশ সরকার ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। এখানে অনেকগুলো আন্তঃমন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া রয়েছ। যেই প্রক্রিয়াগুলো একজন লবিস্টের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় বলে আমার ধারণা।“
মার্কিন শুল্ক নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫ দিন ধরে আমাদের সরকারের সব মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করেছি। এখন আমরা উনাদের আমন্ত্রণ পেলে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরব।”