স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরও ভারতে মুসলিম জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ক্রমেই চাপে পড়ছে। দেশভাগের পর ভারতে থেকে যাওয়া মুসলমানদের জন্য সমান নাগরিক অধিকার ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাষ্ট্র। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে সেই প্রতিশ্রুতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও দমনমূলক নীতির কারণে মুসলমানদের জীবন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
এমনই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন মুম্বাইভিত্তিক সাংবাদিক কবিতা আইয়ার।
প্রতিবেদনে বলা হয় , ২০১৯ সালে সিএএ কার্যকর হওয়ার পর থেকে ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেক মুসলমান প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় তাদের ভোটাধিকার ও নাগরিকত্ব ঝুঁকিতে পড়েছে। কাশ্মির, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দরিদ্র মুসলমানদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই নথি যাচাই ছাড়াই। বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে মুসলমানদের প্রান্তিক করার অংশ।
নাগরিকত্বের বাইরেও বৈষম্য স্পষ্ট হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রেও একই চিত্র। বলিউডে মুসলমানদের নেতিবাচক চরিত্রে দেখানো, সংসদে প্রান্তিকীকরণ এবং সামাজিক জীবনে বঞ্চনা দিন দিন বাড়ছে।
বিজেপি নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়মিতভাবে মুসলমানদের “অবৈধ বাংলাদেশি” হিসেবে টার্গেট করছে। অপ্রয়োজনীয় হেফাজত, পুশব্যাক ও গ্রেপ্তার অভিযানও অব্যাহত রয়েছে। সমালোচকদের মতে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি মুসলমানদের বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরছে, যা গণতন্ত্রের ভিত্তি নড়বড়ে করছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, নাগরিকত্ব হারানো, সাংস্কৃতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়া ও সামাজিক বৈষম্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করছে। স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা পাওয়ার কথা থাকলেও আজ তারা নিজেদের দেশেই নিরাপদ নন।
জেড নিউজ , ঢাকা ।