শোল, বোয়াল, টেংরা, বাইমসহ নানা প্রজাতির শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সারিবদ্ধভাবে রয়েছে এসব শুঁটকি।
পুরো মাঠ জুড়ে রয়েছে এমন দৃশ্য।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখের দ্বিতীয় দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুণ্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলার।
দুই দিনব্যাপী এই মেলায় স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা নানান ধরনের শুঁটকির পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
জনশ্রুতি রয়েছে মুঘল শাসন আমলে পণ্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে কুলিকুণ্ডা গ্রামে এই মেলা শুরু হয়। যার ধারা অব্যাহত রয়েছে ৩শ বছরের বেশি সময় ধরে। তবে কালের আবর্তে মেলা শুরুর প্রথম এক ঘণ্টা পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে মেলা শুরু হয়। এরপর টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ক্রেতারা তাদের পছন্দের শুঁটকি কিনে নিয়ে যান। দুই দিনব্যাপী মেলাতে দেশীয় শুঁটকির পাশাপাশি সামুদ্রিক শুঁটকিও পাওয়া যাচ্ছে। স্বাদে ও গুণে অনন্য হওয়ায় পছন্দের শুঁটকি কিনতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা ভিড় করছেন এই মেলায়।
মেলায় প্রতি কেজি নাইল্লা মাছের শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, বোয়াল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা, কাইক্কা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাঁচকি শুঁটকি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শোল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা এবং বাইম মাছের শুঁটকি কেনা-বেচা হচ্ছে প্রকার ভেদে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। এছাড়া এ বছর সামুদ্রিক কিছু মাছের শুঁটকিও এনেছেন দোকানিরা।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা কয়েকজন জানান, মেলাটি প্রায় তিনশ বছর ধরে ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। বাজারের শুঁটকিতে কেমিক্যাল থাকায় তেমন ভালো হয় না। শুঁটকি মেলায় হাওরাঞ্চলের দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি পাওয়া যাচ্ছে। যার গুণগত মানও ভালো।
বিক্রেতা জানান, শুঁটকির মান ভালো হওয়ায় তাদের বিক্রির চাহিদাও অনেক বেশি। দুই দিনব্যাপী মেলার হাটে ইজারার জন্য কোনো টাকা দিতে হয় না। সবাই পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন।
এ মেলায় শুধু শুঁটকিই নয়, গ্রামীণ-লোকজ নানা পণ্যের পসরাও সাজিয়েছেন দোকানিরা। শিশুদের জন্য রয়েছে মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী। রয়েছে হরেক স্বাদের বাহারী খাবারও।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন, মেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।