ভারতে দিন দিন মুসলিমদের উপর নিপীড়ন ও বৈষম্য বাড়ছে। ধর্মের পরিচয়ই যেন হয়ে উঠেছে অপরাধ। মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ও বৈষম্যের নতুন ছুতো হয়ে উঠেছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী তকমা।গত কয়েক মাস ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধ ‘বাংলাদেশি’ ধরার যে অভিযান চলছে, সেই প্রক্রিয়ায় আটক করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদেরও।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম শ্রমিকরা বাংলাদেশি সন্দেহে পুলিশের নজরদারিতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেককেই সাতদিন পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে, পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কোন লিখিত প্রমাণ ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, ভয় পাচ্ছেন ঘর থেকে বের হতে। অনেকেই ট্রেনের টিকিট পাওয়ার অপেক্ষায়, আর যারা টিকিট পাচ্ছেন না, তারা বাস ভাড়া করে পরিবার নিয়ে দেশের বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
গুরুগ্রামে বসবাসকারী মালদার আনিসুর রহমান বলেন, তিনি সাত দিন আটক ছিলেন, পরিচয়পত্র দেখালেও পুলিশ তার কথা বিশ্বাস করেনি। আবার ধরতে পারে বলে এখন বাইরে বের হতে তিনি ভয় পাচ্ছেন । তাঁর মতো অনেকে কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন, যদিও পরিবারের সংসার চালানো নিয়ে গভীর উদ্বেগ তাদের।
একই অবস্থা মালদারই বাসিন্দা মুকুল হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির । তিনিও আনিসুর রহমানের সাথেই আটক হয়েছিলেন ।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ এখান থেকে পালাচ্ছে, কারণ তারা বাংলাদেশি সন্দেহে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।
এই পরিস্থিতি শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, বৃহত্তর পরিসরে সামাজিক সংকটও তৈরি করছে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাসকারী বহু পরিবারের জীবন এখন অনিশ্চয়তায়, তাদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
জেড নিউজ , ঢাকা ।