সোমবার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর ফের আলোচনায় আসলো বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতের দূর্বলতার বিষয়টি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানের পাইলট বিমানটিকে জনবিরল স্থানে অবতরণ করানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বিমানটি এতোটাই ত্রুটিপূর্ণ ছিলো যে তা সম্ভব হয়নি।
তথ্য বলছে, বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের রেকর্ড বেশ ভারি। চলতি বছরের ১৩ মার্চ যশোরে গ্রোব-১২০টিপি বিমান জরুরি অবতরণকালে দুর্ঘটনায় পড়ে। ২০২৪ সালের ৯ মে চট্টগ্রামে ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভেঙে পড়ে। মারা যান কো-পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ। ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর বগুড়ায় একটি পিটি-৬ প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়। তবে সে সময় পাইলটরা অক্ষত ছিলেন। ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রশিক্ষণের সময় টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ বিজি।
এতে নিহত হন পাইলট আরিফ আহমেদ। ২০১৫ সালের জুনে এফ-৭ যুদ্ধবিমান সাগরে বিধ্বস্ত হলে পাইলট তাহমিদ নিখোঁজ হন। ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যশোরের মাহিদিয়া গ্রামে পিটি-৬ বিমান ধানখেতে জরুরি অবতরণ করে। ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে আরেকটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ে, তবে পাইলট রক্ষা পান। ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর শাহ আমানত বিমানবন্দরে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলেও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মুনতাসিন প্রাণে বেঁচে যান।
২০১০ সালের ২০ ডিসেম্বর বরিশালে পিটি-৬ বিমান ভেঙে পড়ে, এতে দুই পাইলট নিহত হন। ২০০৮ সালের এপ্রিলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের পাহাড়িপাড়া গ্রামে পাইলটসহ বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান। এতে নিহত হন স্কোয়াড্রন লিডার মোর্শেদ হাসান। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তখন সম্ভাব্য কারিগরি ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে তিনবারই ছিল এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমান। উত্তরায় বিধ্বস্ত হওয়া এফ-৭ সিরিজের বিমানটিও ছিল চীনের তৈরি জে-৭ তথা এফটি-৭ বিজিআই। এটি মূলত ১৯৬০-৯০ দশকের প্রযুক্তি। বর্তমানে এ ধরনের বিমানের দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি বলে উল্লেখ করেছে অ্যারোস্পেস গ্লোবাল নিউজ-এজিএন। ১৯৬০ থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বহরে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় উড়তে সক্ষম ও দ্রুতগামী জেট ছিল জে-৭।
জেড নিউজ, ঢাকা।