শিক্ষা, সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার৷ আর শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। এখনও বহু জায়গায় বাল্য বিবাহের খবর পাওয়া যায়৷ যদিও সঠিক সময় পুলিশ খবর পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে৷
এবার বাল্য বিবাহ রুখতে মহিলা সেজে সচেতনতার বার্তা দিলেন মাচপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়। তিনি নিজে একজন মহিলার বেশ ধারণ করে জনসমক্ষে এসে নিজের তৈরি ছড়া ও প্যারোডি গানের মাধ্যমে মানুষদেরকে বোঝাচ্ছেন, কেন বাল্যবিবাহ একটি অপরাধ। এই কাজটি যখন করছিলেন তখন তার পরনে ছিল ঘাগড়া, মাথায় লম্বা চুল, হাতে চুরি, চোখে কাজল, ঠোঁটে লিপস্টিক৷ সাজগোজে সাহায্য করেন তার স্ত্রী।
কেন এমন ভাবনা? জানতে চাইলে দেবাশীষবাবু জানান, ছাত্র জীবনে অভিনয়ের সূত্রে তার আলাপ হয় বহু বহুরূপীদের সাথে। তখন থেকেই বহুরূপীদের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ। গরমের ছুটি চলাকালীন তিনি স্থির করে ফেলেন বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে তিনি এবার একজন বহুরূপী সাজবেন। সেই মত মহিলা সেজে বেরিয়ে পড়েন গ্রামে৷ শিক্ষকের এই উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন৷
শিক্ষক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি হুগলি খানাকুলের তিলক চক গ্রামে৷ তিনি যে এলাকায় বাস করেন, সেই এলাকার বেশিরভাগ মানুষজনই শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির। দেবাশীষবাবুর কথায়, তাঁর এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, বাড়ির মেয়েরা তাদের কাছে বোঝা। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। বর্তমানে এই প্রবণতা পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতায় একটু কম হলেও, মানুষের মনের মধ্যে থেকে মেয়েদের নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, তা কখনোই কাটেনি। প্রশাসনের পাশে থেকে সেই কাজটি করতে চান এই প্রধান শিক্ষক৷