ঢাকায় হাসিনা সরকারের পতনের পর মারমুখী আচরণ করছে নয়াদিল্লি। বিশেষ করে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের খোলামেলা বক্তব্যের পর বাংলাদেশের প্রতি বৈরিতা সুলভ আচরণ শুরু করে ভারতের মোদি সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে তাদের পুশব্যাক পলিসি তার বড় প্রমাণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গেল কয়েকদিনে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে কয়েকদফা পুশব্যাকের চেষ্টা চালায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বাংলা ভাষাভাষি এসব লোককে বাংলাদেশে নাগরিক হিসেবে ভারত দাবি করলেও সেটি প্রমানিত হয়। এমনকী এর মধ্যে দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান নাগরিক ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক বা পাচারের শিকার হওয়া নারীদের অনেক ক্ষেত্রে মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিয়ে থাকে বিএসএফ। এই পদ্ধতির অবশ্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি রয়েছে।ভারতের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, পুলিশ কাউকে ধরলে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নিয়ম আছে। যা বিদেশীদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য।
ভারতে পুশব্যাক প্রক্রিয়ার কোনো আইনি স্বীকৃতি নেই উল্লেখ করে দেশটির মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের প্রধান কিরীটি রায় বলেছেন, বিদেশ থেকে কেউ যদি পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া ভারতে আসেন, তাহলে পদ্ধতি হলো তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী ভারতীয়রা যে অধিকার পান, সেই একই অধিকার ভারতের মাটিতে থাকাকালীন বিদেশী নাগরিকরাও পাবেন। পুশব্যাক ও পুশইনের কোনো আইনী ভিত্তি নেই।
এদিকে বাংলাদেশে থাকা অবৈধ ভারতীয়দের নিয়ম মেনেই পুশ ব্যাকের কথা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়া ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থেকে থাকলে তাদেরও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
শনিবার বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়েছে, গুজরাট ও রাজস্থানের পুলিশ কিংবা ভারতীয় বিএসএফ পুশব্যাক প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলতে চায়নি। তবে নিজেদের ডিকশনারিতে ‘পুশ-ব্যাক’ শব্দটাই নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে বিএসএফ।
আর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসিও ওই খবরে বলা হয়, নিয়ম মেনে অবৈধ বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানোর কাজটি সময়সাপেক্ষ। তাই ছোট-বড় দলে ভাগ করে তাদের ‘পুশ-ব্যাক’ই করা হচ্ছে। – জেড নিউজ, ঢাকা।