নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের সিদ্ধান্ত ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেন জি প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আন্দোলন অনলাইন থেকে সড়কে পৌঁছেছে। দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সোমবার সকালের দিকে দেশটির হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নিরাপত্তাবাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে রাজধানীতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, টিয়ার গ্যাস, জলকামান ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের পাশাপাশি রাজধানীতে কারফিউ জারি করেছে দেশটির সরকার।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভকারীরা কাঠমান্ডুর মৈতিঘর এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দেশটিতে সরকারের দুর্নীতি ও নানা ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আন্দোলনকারীরা ‘নেপো কিড’ এবং ‘নেপো বেবিস’ নামের বিভিন্ন ধরনের হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনলাইনে পোস্ট করেন। সরকারবিরোধী এসব হ্যাশট্যাগ অনলাইনে ব্যাপক ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।
দেশটির সরকার নিবন্ধনহীন ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তারা অনলাইনের আন্দোলনকে সড়কে নেওয়ার ডাক দেন।
কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ‘হামি নেপাল’ নামের একটি সংগঠন প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সংগঠনের চেয়ারম্যান সুধান গুরুং বলেছেন, সরকারের কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজ দেশজুড়ে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
আয়োজকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের বিভিন্ন রুট এবং নিরাপত্তা নির্দেশনা শেয়ার করছেন। তারা শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম পরে বই হাতে নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।
সরকারি দুর্নীতি এবং সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জেন জি প্রজন্মের বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার পর কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন কার্যালয় সেখানে কারফিউ জারি করেছে।
সোমবার সকালের দিকে বানেশ্বর জেলার কিছু নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করলে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। পরে দেশটির রাষ্ট্রপতির বাসভবন শীতলনিবাস, উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন লেইনচৌর, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বালুয়াটার এবং এর আশপাশের এলাকায় কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।