মুখে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের কথা বললেও বরাবরই এসবের উল্টো চরিত্রের রাজনৈতিক দল ছিলো আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ চব্বিশের বিপ্লব যার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ক্ষমতায় টিকে থাকতে দলটি অন্তত হাজার দেড়েক ছাত্র-জনতাকে করেছে হত্যা। অর্ধলক্ষ মানুষকে করেছে পঙ্গু। যার মধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ চিরতরে হারিয়েছে তাদের চোখের আলো।
এই সবকিছু বিবেচনায় যাকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে গণহত্যা। অর্থাৎ বাংলাদেশে গণহত্যাকারী একমাত্র রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই গণহত্যার অপরাধেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। রাজপথে শুরু হয় ফের আন্দোলন। তাতে যোগ দেয় ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলো।
অবশেষে শনিবার রাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপণ জারির কথা রয়েছে।
ইতিহাস বলছে, ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে দলটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ১৯৫৫ সালে দলটির নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়।
একাত্তরের ২৬শে মার্চ পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে দলটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও স্বাধীনতা পরবর্তী নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত হয় আওয়ামী লীগ। এসময় শেখ মুজিব আওয়ামী লীগসহ সব দলকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ টানা ১৬ বছরের শাসনামল দেশের ইতিহাসে গুম, খুন আর লুটপাটের রেকর্ড গড়ে। ক্ষমতায় থাকতে বিনা ভোট, রাতের ভোটের নির্বাচন করে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেন শেখ হাসিনা।
সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে নৃশংসতম গণহত্যা চালিয়েও ঘৃণ্য ইতিহাস তৈরি করে দলটি। প্রবল গণ বিপ্লবের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার দেখাদেখি দলটির প্রায় সব শীর্ষ নেতাই এখন পলাতক।
রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, দেশের ইতিহাসে তিন তিনটি গণহত্যা চালায় হাসিনার আওয়ামী লীগ। যে অপরাধের বিচার অবশ্যই হতে হবে বাংলার মাটিতে। আর বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটি তাদের কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না, এটি জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা। সরকার জনগণের এই প্রত্যাশার যথাযথ মূল্যায়ন করায় তারাও প্রশংসার দাবিদার। – জেড নিউজ,ঢাকা।
