শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, আমরা বিকৃত ইতিহাস থেকে সত্যকে উদ্ধার করতে চাই। যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের পরিবারের কান্না, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে গেঁথে থাকা গুলির চিহ্ন এসবই একদিন ন্যায়বিচারের নির্মাণকাজে প্রমাণ হয়ে উঠবে।
রবিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে জুলাই বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘প্রথম জুলাই বিপ্লব আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (আইসিজেআর-১)’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমেরিকার স্ট্যাস্ট ডিপার্টমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবিদ জন এফ ডেনিলোইজ বলেন, জুলাই বিপ্লব কোনও বিদেশি শক্তি বা গভীর রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের ফল নয়। এটি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব সংগ্রামের ফসল। ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীদের কাছে প্রমাণ দেওয়া কঠিন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনও দেশ এতে জড়িত ছিল না। আজ পর্যন্ত আমি এমন কোনও প্রমাণ দেখিনি। যদি এমন কোনও প্রমাণ কারও কাছে থাকে, আমি সেটা দেখাতে চ্যালেঞ্জ করছি।
তিনি আরও বলেন, বিপ্লব সফল হওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার অস্থিতিশীল পরিবেশ ও তথ্য যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে, যা এখনও চলমান। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে, জুলাই বিপ্লবে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের মা বিলকিস জামান ও বাবা শামসুজ্জামান বক্তব্য দেন। তারা সব শহীদের পরিবারের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে শহীদদের সনদ চান।
জুলাই বিপ্লবের প্রস্তাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, একাডেমিক ও গবেষণাপত্র উপস্থাপন ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা এবং বাংলাদেশ ২.০ গঠনের দিকনির্দেশনা তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে দেশ ও বিদেশের মোট ১৫টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি সংগঠন।
সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪০০টি প্রবন্ধ জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬০টি প্রবন্ধ মৌখিক উপস্থাপনের জন্য ৬০টি পোস্টারকে মনোনীত করা হয়। সম্মেলন শেষে টিএসসি অডিটোরিয়ামে ‘লাল জুলাই’ নামে একটি মঞ্চ নাটক উপস্থাপন করা হয়।
আদিলুর রহমান বলেন, আমরা আজ যে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের পতন দেখেছি, সেটার নিষ্ঠুরতা আমাদের বিবেককে সামগ্রিকভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে। এই শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করেছিল। শুধু তাই নয় র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সন্ত্রাসের হাতিয়ার বানানো হয়। গুম-খুন হয়ে উঠে নিত্যদিনের ঘটনা। কবি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ছাত্রনেতাদের অপরাধী হিসেবে জেলে ভরা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্ত চিন্তায় বাধা দেওয়া হতো।